
তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত নদীর ফাজিলপুর পাথর ও বালু মহালে বালু-পাথর বালুবাহী নৌকা থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)’র নাম ভাঙিয়ে যাদুকাটা নদীর ফাজিলপুর ও বিশ্বম্ভরপুরে ফতেপুরে ইজারাদার আওয়ামী লীগ নেতা রতন বাহিনীর বেপরোয়া চাঁদাবাজি। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করে যাদুকাটা ও পাটলাই নদীর নিরীহ নৌ-শ্রমিক ও ব্যবসায়ীবৃন্দ।
আজ ১০ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) বিকালে যাদুকাটা ও পাটলাই নদীর নিরীহ নৌ শ্রমিক ও ব্যবসায়ীবৃন্দ আয়োজনে যাদুকাটা নদীর পাঠানপাড়া খেয়াঘাটে এলাকায় উক্ত মানববন্ধনটি পালন করা হয়। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনের এ সময় বক্তব্য রাখেন, তাহিরপুর উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হক, বাদাঘাট ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল ইসলাম, বাদাঘাট ইউনিয়ন যুবদলের সহ সভাপতি মুক্তার হোসেন, নৌ-মালিক ও বালু পাথর ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন তাহিরপুরের যাদুকাটা নদী ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রক্তি নদীতে দীর্ঘদিন ধরে বিআইডাব্লিউটি’র ইজারাদার আওয়ামী লীগ নেতা রতনের নেতৃত্বে টোলের নামে অতিরিক্ত চাঁদ আদায় করে আসছে। অবৈধভাবে কোটি টাকার মালিক রতন ওরোপে ডেঞ্জার রতন এর তার সহযোগী সন্ত্রাসী চাঁদারাজ বাহিনী। সরকারের নিয়ম অনুয়ায়ী ২৫ পয়সা করে টোল আদায়ের কথা থাকলেও রতন বাহিনী যাদুকাটা নদীর ফাজিলপুর ও রক্তি ও আবুয়া নদীর ফতেপুর এলাকায় বিআইডাব্লিউটি’র নামে নিরীহ গরীব নৌ শ্রমিকদের মারধর করে জোরপূর্বক ১ থেকে দেড় টাকা করে বেপরোয়া চাঁদাবাজি করে ওই চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট চক্রটি। এর আগেও এদিকে গত (৯ আগস্ট)বালুবাহী নৌকা থেকে চাঁদা আদায় বন্ধের দাবি জানিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন বাদাঘাট স্টেশন ক্রাশার মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড, বাদাঘাট তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সমিতিসহ মালবাহী নৌযান শ্রমিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের নেতৃবৃন্দ। কিন্তু প্রশাসন এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় চাঁদাবাজ রতন বাহিনী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিআইডাব্লিউটি এর টোল আদায় করার কথা বিশ্বম্ভরপুর রক্তি ও আবুয়া নদীর ফতেপুর এলাকায়। কিন্তু সরকারের এই আদেশ অমান্য করে আওয়ামী লীগ নেতা রতন নিজের প্রভাব কাটিয়ে এখন তার নিজ এলাকা যাদুকাটা নদীর ফাজিলপুর এলাকায় টোল আদায় করছে।
বক্তারা আরও বলেন, প্রতিদিন নৌ শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সরকারের নিয়মনীতির বাহিরে অবৈধভাবে দুই থ্রকে তিনগুণ হারে টোলের নামে লাখ লাখ টাকা চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্রটি। তাহিরপুর উপজেলার ফাজিলপুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রক্তি নদী ও আবুয়া নদী থেকে ফতেপুর ইউনিয়নের রঙ্গিয়ারচর ব্রিজের নিচ দিয়ে চলাচলকারী নৌকা থেকে দিনে-দুপুরে এই চাঁদাবাজি চলছে। চাঁদা দিতে রাজি না হলে নৌকায় থাকা শ্রমিকদের লাঞ্ছিত এবং মারধর করে চাঁদা আদায় করছে রতনের চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা। তাদের চাহিদামতো চাঁদা না দেওয়ায় নৌকার মাঝিগণকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে ইজারাদার আওয়ামী লীগ নেতা রতনের লোকজন।বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নির্দেশনা অনুযায়ী আশুগঞ্জ-ভৈরব বাজার নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার আবুয়া ও রক্তি নদীর সংযোগস্থল হতে লাউড়েরগড় পর্যন্ত এলাকায় উভয় তীরের নৌ-যানের উঠানামাকৃত মালামালের জন্য শুল্ক চার্জ আদায় কথা থাককেও ইজারাদার রতনের চাঁদাবাজ বাহিনী বিআইডব্লিউটিএ শর্তে বঙ্গ করে চলন্ত অবস্থায় নৌযান হতে শুল্ক (টোল) আদায় করছে। অতি দ্রুত ওই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে নৌ-শ্রমিক, মালিক ও ব্যবসায়ীরা আরও কঠোর আন্দোলনে নামাজ হুঁশিয়ারি দেন।
এবিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, ইজারাদার নিয়মের বাহিরে যদি টোল আদায় করে থাকে এবং স্থান পরিবর্তন করে ফাজিলপুর এসে থেকে তাহলে খোঁজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তাহিরপুর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিআইডব্লিউটিএ নামে কেউ যদি অতিরিক্ত চাঁদ আদায় করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।